করোনাকালে একদিকে যখন মানুষের আয় কমেছে তখন খরচ বেড়েছে জরুরী ভোগ্যপণ্যের কেনাকাটায়। সংসার চালাতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছে নিম্ন আয়ের ভোক্তারা। অর্থনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন; মহামারী পরবর্তী সময়ে গরিব মানুষের জীবন ধারণ সহজ করতে জোরালো করতে হবে সরকারের খোলা বাজারে বিক্রয় কার্যক্রম। পাশাপাশি, অতি দরিদ্রদের সুনির্দিষ্ট করে নগদ সহায়তার কথাও বলছেন বিশ্লেষকরা।
মহামারীর সাথে যুদ্ধ করে টিকে থাকতে গিয়ে যখন বেড়েছে হাত পাতা হত দরিদ্র মানুষের সংখ্যা; তখন উল্টো প্রতিনিয়ত খরচ বাড়ছে নিত্যপণ্যের কেনাকাটায়। নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যম আয়ের পরিবার, সবাই যেন আতঙ্কে আছেন ভোগ্য পণ্যের বাজার নিয়ে। চাল, তেল কিংবা ডাল ছাড়াও এ তালিকায় যুক্ত হয়েছে পেঁয়াজ, চিনি আটা, ময়দা, মুরগি, ডিমসহ আরও বেশকিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। এছাড়াও বেড়েছে সাবান ও টুথপেস্টের মতো নিত্যব্যবহার্য সামগ্রীর দামও। ফলে মানুষের আয় কমলেও খরচের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
সরকারি বিপণণ সংস্থা টিসিবির হিসাব বলছে; ২০২০ সালের মার্চ মাসে করোনা শুরুর আগে মোটা চালের যে দাম ছিল তা এই সময়ে এসে বেড়েছে অন্তত সাড়ে ৩১ শতাংশ। এছাড়া খোলা আটার দাম বেড়েছে ২০ শতাংশ, ময়দা ৩৩ শতাংশ। এক লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল ৪৩ শতাংশ, চিনির দর বেড়েছে ১৯ শতাংশ, মোটা দানার মসুর ডাল ৩০ ও গুঁড়া দুধের দাম ১৩ শতাংশ বেড়েছে। বিপরীতে সরকারি হিসেবেই করোনাকালে মানুষের আয় কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ।
ক্রেতাদের অভিযোগ, করোনাকালীন সময়ে দ্রব্যমূল্যের দাম উঠা-নামা করায় অনেকে অসুবিধেয় পড়েছেন।
অন্যদিকে, আরেক ক্রেতা বলছেন, বাজারে যে হারে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ছে, সে হারে বেতন বাড়েনি যার ফলে অনেকেই বিপাকে পড়েছেন।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ টিসিবির ট্রাকে প্রতিনিয়ত বাড়ছে অপেক্ষমান হতদরিদ্র মানুষের সংখ্যা। যেখানে অনেক মধ্যবিত্তও এখন নিরুপায় হয়ে প্রতীক্ষায় থাকেন টিসিবির ট্রাকের।
এদিকে, সাশ্রয়মূল্যে যে টিসিবি পণ্য বিতরণ করা হচ্ছে তার উপর সরকারের আরও গুরুত্বারোপ করার আহবান জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
অর্থনীতি বিশ্লষকরা বলছেন; অতিমারি পরবর্তী সময়ে কেবল খোলাবাজারে বিক্রি বাড়ানো নয়; একই সাথে অতি দরিদ্রদের জন্য নিতে হবে নগদ সহায়তা কার্যক্রমও।
পেঁয়াজ আমদানিতে ৫ শতাংশ শুল্ক তুলে নেয়া হলেও এখনো রাজধানীর খুচরা বাজারে ১ কেজি পেঁয়াজ কিনতে ভোক্তাকে গুনতে হচ্ছে ৬০ টাকা।